আস্ত বাঁদর, ভেঁড়া ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যায় এই দৈত্যাকার পাখি
ছোট বেলায় আমরা প্রায় সকলেই বাংলা বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত হয়েছি একটা ছড়ার মাধ্যমে। মনে আছে নিশ্চয়ই... ‘অ-এ অজগর আসছে তেড়ে, আ-এ আমটি খাব পেড়ে, ইঁদুর ছানা ভয়ে মরে, ঈগল পাখি পাছে ধরে’... রঙিন ছবি আঁকা বইয়ের সেই ছবি দেখে অনেক শিশুর মনেই ‘ঈগল পাখি’ সম্পর্কে একটা ভীতি হতো। অত বড় পাখি! দুষ্টুমি করলে সত্যিই যদি তুলে নিয়ে চলে যায়! এই ভয় দেখিয়ে কত মা তাঁদের সন্তানকে বায়না ভুলিয়ে খাবার খাইয়ে দিয়েছে... তবে সবটাই কিন্তু গল্প নয়, এমন বিশাল আকৃতির ঈগল কিন্তু সত্যিই আছে। ৭-৮ কেজি ওজনের শিকার যেমন, একটা আস্ত হনুমান বা বাঁদর অথবা ভেঁড়া অনায়াসেই ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যেতে পারে এই দৈত্যাকার পাখি। নাম হার্পি ঈগল।
গল্প নয়, এমন বিশাল আকৃতির ঈগল কিন্তু সত্যিই আছে। ৭-৮ কেজি ওজনের শিকার যেমন, একটা আস্ত হনুমান বা বাঁদর অথবা ভেঁড়া অনায়াসেই ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে যেতে পারে এই দৈত্যাকার পাখি। নাম হার্পি ঈগল।
আকাশের সবচেয়ে বড়, শক্তিশালী আর হিংস্র শিকারি পাখিদের মধ্যে অন্যতম এই হার্পি ঈগল। উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ অংশে ও দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে, ব্রাজিলের রেন ফরেস্টে, পাপুয়া নিউগিনিতে এদের দেখা মেলে।
১৭৫৮ সালে সুইডেনের জীববিজ্ঞানী কার্ল লিনেয়াসের লেখা বই ‘সিস্টেমা নেচার’-এ প্রথম এই হার্পি ঈগলের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। হার্পি ঈগলের মধ্যে স্ত্রী হার্পিরা আকারে একটু বেশি বড় হয়। ওজন সর্বাধিক ১২ কেজি। এর চেয়ে বেশি ওজনের স্ত্রী হার্পিও দেখা গেছে, তবে সেটা বিরল। পুরুষ হার্পিরা তুলনায় ছোট, ওজন ৫ কিলোগ্রামের মতো।
হার্পি ঈগল লম্বায় সাড়ে ৩ ফুটেরও বেশি। ডানা ছড়ালে সেই বিস্তার হয় প্রায় ৭-৮ ফুট। বসে থাকলে হার্পি ঈগলের উচ্চতা প্রায় একটা পূর্ণ বয়স্ক মাঝারি উচ্চতার মানুষের মাথার সমান।
মার্কিন জীববিজ্ঞানীরা জানান, নখ আর বাঁকানো ধারালো ঠোঁট দিয়ে শিকার ছিঁড়ে-খুবলে খায় হার্পি ঈগল। স্ত্রী হার্পিদের হিংস্রতা পুরুষ হার্পিদের তুলনায় অনেক বেশি। এই হার্পিদের শিকারের তালিকায় রয়েছে বাঁদর, ভেঁড়া ছাড়াও ম্যাকাও পাখির দল। বর্তমানে চোরাশিকার আর পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে হার্পি ঈগলের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। হার্পি ঈগলদের অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছেন জীববিজ্ঞানীরা।