...
ই-নলেজ অতিক্রম করলো লক্ষাধিক সদস্যের এক বিশাল মাইলফলক!বিস্তারিত...

আম্মু, আব্বু আমার কি করা উচিত?

"নিত্য ঝুট ঝামেলা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন (অতিথি) (7 পয়েন্ট)   219 বার প্রদর্শিত

বাবা-মা, ছোট বোন এবং আমি এই ৪ সদস্যের পরিবার আমাদের। ছোট বেলা থেকেই বাবার কড়া শাসনের মধ্যে বড় হয়েছি। বাবা সবসময়ই আম্মুর প্রতি ছিলেন নির্দয় ও জুলুমকারী। কাজ- কর্ম থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আম্মুকে অনেক বেশি কষ্ট দিতেন। কিন্তু বিষয় গুলো অভ্যাসগত নরম্যাল বিষয় হয়ে গিয়েছিলো সবার মধ্যেই নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপারের মত। বাব খুবই বদমেজাজী টাইপের মানুষ ছিলেন। আমার বাবা আমার মা কে বিয়ের পুর্বে থেকেই যে কাজ করতেন সেখানে আমার নানা-নানীর যাতায়াত ছিল সেখান থেকেই নানা-নানী আব্বুকে পছন্দ করে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু এসবের মধ্যে তারা বিভিন্ন সময় টাকা পয়সার লেনদেন করে যেটা পরবর্তী তে শোধ করে দিবে বলে কিন্তু তারা আর দেয় না সেই টাকা বরং পরবর্তী তে চাইলে অস্বীকার করা সহ বাবার সাথে খারাপ আচারন করে এবং আম্মু কে নিয়ে যায় তাদের কাছে। পরে আম্মু লুকিয়ে আব্বুর কাছে চলে আসে। তখন আব্বু আম্মু কে বলে নান নানী বা তাদের বাড়ির সবার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে থাকতে। সেভাবেই চলে কিন্তু আম্মু লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক বছর পরে টুকটাক কথা বলা বা খালামনির সাথে দেখা করে। এইগুলো আব্বু জানতে পেরে ও আম্মু কে অনেক মারধোর করে। এই মারধোর টা একবার না বিষয় টা এমন যে আমি আর আমার বোন আম্মুর মার খাওয়া দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। কিন্তু আম্মু কখনও রাগ করে চলে যাওয়া বা এরকম কিছুই করে নি কারন করার উপায় ও ছিল না সে তো সব ছেড়েই চলে এসেছে। এরপরে ও ঘরের বিভিন্ন কার আব্বুর একটা ব্যাবসা ছিল যেটা ঘরে বসেই করতো সে সেটাই সাহায্য করাকে কেন্দ্র করে আমরা ২ ভাই- বোন, আম্মু অনেক মার খেয়েছি। সব থেকে বেশি কষ্ট হত যখন আব্বু ঘরে কোন রান্না করতে দিত না। আম্মু লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যের বাসা থেকে ভাত এনে কয়টা কয়টা করে আমাদের খাওয়া তো। দিনের পর দিন রান্না বান্না বন্ধ করে রাখতো। আমাদের প্রচুর মারতো যার কারনে আম্মু ঠেকাতে এসে বেশির ভাগই নিজেই মার খেত তাও আমাদের লুকিয়ে রাখতো। তখন কিছু করতেও পারতাম না কারন কার কাছে যাব নানা বাড়ির দিকে কারও সাথে তেমন কোন যোগাযোগ ছিল না দাদা বাড়ির ও কেউ ছিলো না বেচে দাদা - দাদীর মধ্যে। প্রতিবেশিরা ঠেকাতে আসতো আবার সম্মানের ভয়ে অনেক সময় তাদের কে বুঝতে দিতাম না যে বাসায় গন্ডগোল হয়েছে। ধীরে ধীরে আমরা বড় হতে লাগলাম পড়াশোনা করলাম এসএসসি এর পরেই কর্মে নেমে গিয়েছিলাম আমি। তখন থেকেই আর কখনও বাড়ি থেকে টাকা পয়সা নেই নি পারলে কিছু দিয়েছি। এখন আমার বয়স ২৪ বছর আমার বোন এইচএস সি শেষ করেছে। কিন্তু ঐ সেই আমাদের জন্মের ও আগের সেই টাকার রেষ রয়ে গিয়েছে। ঐ টাকা টাকা করে আম্মু কে গালি গালাজ করা গ্যাঞ্জাম বাঁধানো এগুলো প্রায়ই করে। আমি এখন আল্লাহ্‌র রহমতে নিজে চলা, বাবা মাকে নিয়ে মোটামুটি চলার মত নিজেই ইনকাম করি, ঢাকা তে থাকি। আমার বোন ও ইনকাম করে ভলান্টারি সংগঠনের সাথে কাজ করে বিভিন্ন ধরনের। এখন আব্বুর টাকার মুখাপেক্ষী আসোলে ঐ ভাবে কেউ না। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল চরম দারিদ্র দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। কিভাবে আম্মুর মুখে একটু হাসি ফোটানো যায়। কিভাবে আব্বুকে আম্মুকে নিয়ে সুন্দর একটা পরিবার বানানো যায়। এর বাইরে আমার জীবনে আমি কিছু চিন্তা করি নাই। আমার দাদা দাদি আমরা অনেক ছোট থাকতেই মারা গিয়েছে। আমার আব্বু চাঁচা রা অনেক জন জায়গা জমি নিয়ে গন্ডগোল থাকবে স্বাভাবিক বা থাকে কিন্তু সেই গুলো নিয়েও আমাদের ইনভল্ভ করে আমাদের সাথে চিৎকার চেচামেচী করবে আম্মুকে গালি গালাজ করবে। তারা ভাইরা সবাই একজায়গায় হয়ে জমি ভাগ বন্টন করেছে তখন আমরা কেউ ছিলাম না কিন্তু সেখানে আব্বু ঝামেলা করে চলে এসেছে দীর্ঘদিন ফোন বন্ধ করে রেখেছে। কারো সাথে কোন যোগাযোগ করে নি এখন আবার সেই সব জায়গা জমি নিয়ে বাসায় অশান্তি তৈরি করেছে। এখন সে চায় তার বাকি ভাইদের নামে আজে বাজে কথা লিখে বা তারা কি কি করেছে, কি প্রতারনা করে কিভাবে ঠকিয়েছে এই গুলো আমাদের দিয়ে লিখিয়ে গ্রামে গিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে দিবে তাদের সম্মান নষ্ট করবে কিন্তু আমরা মানা করেছি বা এর বিপক্ষে বলেছি। তখন থেকে এই টা এবং ঐ আগের আম্মুর টাকা সব গুলো কে কেন্দ্র করে আবার আম্মুর প্রতি অত্যাচার শুরু করেছে। আমরা ২ ভাইবোন কত বড় হয়েছি আমাদের সামনে আম্মু কে এত নগন্য বিশ্রী ভাষায় গালি দেয় যা শুনলে ঐ সময়ই মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে হয়। এতসব কিছুর পরেও আজ পর্যন্ত কোন দিন তার সাথে বেয়াদবির আচারন তো দূরে থাক আমি একটা খারাপ ভাষায় কথা বলি নি বরং যত বারই ঝামেলা হত আম্মু কে পছনে সরিয়ে দিয়ে আমু সামনে দাড়াতাম অন্তত আমাদের সামনে যাতে আম্মুর গায়ে হাত না তুলতে পারে। আব্বুর বয়স এখন প্রায় ৬০ বছরের কাছা কাছি। তার উচ্চ মাত্রায় ডায়বেটিস। তার নিজেরই এখন হেল্প প্রয়োজন। যত দিন সবঠিকঠাক ছিল আমি সব সময় কোন অসুস্থ্যতা শুনলে বিলম্ব না করে ডাক্টার দেখাতে বলতাম। কিন্তু গত ৭/৮ মাস ধরে চিত্র টা পালটে গেছে। বলেছি যে এখন আর কেউই তার সরাসরি ইনকামের ওপর নির্ভরশীল না তাই এখন সে এরকম গ্যাঞ্জাম বাধিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। ঘরে আর খাওয়া দাওয়া করবে না। আম্মু তাকে মানিয়ে বার বার আনার চেস্টা করে কিন্তু যত বার যায় অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে আম্মুকে আসে না। সর্বশেষ ৩ মাসের মত বাইরে ছিল তখন আমি ঢাকাতে ছিলাম আমি পরে জানতে পেরে বাসায় এসে অনেক বুঝিয়ে বলে বাসায় এনেছি। এরপরে আমি ঢাকায় চলে যাওয়ার ১ মাসের মাথায় আবারও একই রকম ভাবে গ্যাঞ্জাম বাধিয়ে চলে গেছে ঘরে আসে না, খায় না। পাশে একটা বাসা আছে ঐ খানে ঘুমায়। আম্মু আনতে গেলে চিল্লাপাল্লা করে। খাবার দিয়ে আসলে খায় না পরদিন গিয়ে পচা খাবার ফেলে দিতে হয়। লাস্ট যে ৪ মাস বাইরে ছিল তখন আম্মু কে এই পরিমান প্রেশার দিয়েছে যে তুই যদি তোর বাপ মার কাছ থেকে আমার টাকা এনে দিতে না পারিশ তাইলে আমি ডিভোর্স দেবো এটা শুনে আম্মু কান্না করতে করতে পরে আমি সহ ম্যানেজ করে ১ লাখ টাকার মত তাকে দেয়া হয়েছে যে এটা নানীর কাছ থেকে আনা হয়েছে বলে। এখন সে ঐ কাগজ লিখে সারা গ্রামের মানুষ কে দিবে এইটা আমাদের দিয়ে করতে বলে। আমার চাচাতো ভাই বোন দের সাথে আমাদের কত ভালো সম্পর্ক ছিলো যা অনেকটাই গেছে আব্বুর কারনে আবার যদি এই বয়সে এসে এই গুলা করে এখন কিভাবে তাকে এই কাজ করতে আমরা সাপোর্ট দিবো। সে এখন বাসা থেকে পুরোপুরি চলে গেছে আর আসবে না এরকম বলে।

আমি ছেলে না পারছি নিজের মায়ের এই অত্যাচার দেখতে না পারছি নিজের বাবার কষ্ট দেখতে। আমি সব ভুলে গিয়েছি ছোট বেলার কথা কখনই মুখের বের পর্যন্ত করি নি আব্বুর বয়স বিবেচনা করে তার থেকেও বড় বিষয় আমি আব্বু আম্মু দুজনকেই অনেক বেশি ভালো বাসি। আমার আব্বুর সব খারাপই আমি বললাম কিন্তু আব্বু ও সারা জীবন কষ্ট করেছে শুধু আমাদের মানুষ করার জন্য, লেখাপড়া শিখানোর জন্য। তার কোন একটা খারাপ অভ্যাস ছিল না, কোন বন্ধু ছিলো না কোন বাজে খরচ করতো না সেও সারা জীবন আমাদের জন্যই খেটেছে, করেছে। কিন্তু এখন এরকম করে আমি যে কি করবো আমি বুঝতে পারি না। খুবই কষ্ট লাগে। জানি না কত দিন এই মানসিক যন্ত্রনা নিয়ে বেচে থাকতে পারবো। আমার কি করা উচিত আসোলে। আমি আমার মাকে আর কান্না করতে দেখতে পারবো না। আমার ঐ বয়সে কর্মে নামার উদ্দ্যেশ্য ছিলো একটাই সারা টা জীবন আম্মু এত কষ্ট করেছে আমাদের জন্য কি করে আম্মু কে একটু ভালো রাখা যায়। আম্মু আব্বু কে একটু সুখ, আরাম দেয়া যায়। কিন্তু আমি জানি না শেষ পরিনতি কি হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহই সর্বত্তম পরিকল্পনকারী!


লিংক কপি হয়েছে!



এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে দয়া করে প্রবেশ কিংবা নিবন্ধন করুন ।

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি উত্তর
2 টি উত্তর
"অন্যান্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Aive Rahaman (অতিথি) (6 পয়েন্ট)  
0 টি উত্তর

18,581 টি প্রশ্ন

19,469 টি উত্তর

2,568 টি মন্তব্য

102,918 জন সদস্য

ই-নলেজ কুয়েরি বাংলা ভাষায় সমস্যা সমাধানের একটি নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট। এখানে আপনি প্রশ্ন-উত্তর করার মাধ্যমে নিজের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি দিতে পারেন অন্যদের সমস্যার নির্ভরযোগ্য সমাধান! বিভিন্ন ব্যক্তিগত সমস্যা, পড়ালেখা, ধর্মীয় ব্যাখ্যা, বিজ্ঞান বিষয়ক, সাধারণ জ্ঞান, ইন্টারনেট, দৈনন্দিন নানান সমস্যা সহ সকল বিষয়ে প্রশ্ন-উত্তর করতে পারবেন! প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে বাংলা ভাষায় উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য!
তাই আজই যুক্ত হোন ই-নলেজে আর বাড়িয়ে দিন আপনার জ্ঞানের গভীরতা...!
Empowering Novel Learners with Zeal (Enolez)



  1. Enolej Official Team

    75 টি পরীক্ষণ কার্যক্রম



  2. MdAUKhan

    1 টি পরীক্ষণ কার্যক্রম



  1. Dany Basset

    100 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    0 টি প্রশ্ন

  2. Mehdi Cassonnet

    100 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    0 টি প্রশ্ন

  3. Enolej Official Team

    24 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    2 মন্তব্য

    4 টি প্রশ্ন

  4. ইফতেখার নাইম

    15 পয়েন্ট

    3 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    2 টি প্রশ্ন

  5. TamimAdnani

    6 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    1 প্রশ্ন

...